ভূমিকা :
বিশ্ব ব্রম্ভাণ্ডের এই বিশাল জগৎ সংসারে জাগতিক নিয়মানুসারে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয় |ধ্রুব সত্য যেমন পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘোরে , রোজ সকালে পূর্ব দিকে সূর্য্য ওঠে এই প্রকার বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে সকল কিছুই নশ্বর | বিষয়বস্তু ও স্থান,কাল,পাত্র প্রভৃতির ওপর নির্ভর করে সকল কিছুই জীবন কাল নির্বাহনের পর বিনষ্ট হয় ও আবার নতুনের সৃষ্টি হয়| হ্যা এটি সত্য যে জীবন (প্রাণ) অপেক্ষা অনেক ক্ষেত্রেই কিছু জড়পদার্থের জীবনকাল বেশি হয় কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা খুবই ক্ষণস্থায়ী | বিস্তর আলোচনা , পরীক্ষা নিরীক্ষার পর যে সকল তত্ত্ব আবিষ্কার হয়েছে তা সকলেই এই যুক্তির পক্ষেই সমার্থক রূপ পেয়েছে |
পুরাতনের বিনষ্ট হয়ে নতুনের সৃষ্টির মাধ্যমেই বিশ্বের জৈবিক ও সামাজিক চক্র নির্মিত হয়েছে ও তা যুগ যুগ ধরে হয়ে চলে আসছে | এই ভাবেই পৃথিবীর সকল ভারসাম্য রক্ষা হয় , পুরাতনের বিনাশ ও নব জীবনের সৃষ্টি এটাই সময়ের নিয়ম |
আমি জানি আপনারা হয়তো ভাবছেন জাপানিস Candlestick Reversal Pattern এর এই ব্লগে আমি জীবন চক্র নিয়ে কথা বলছি কেন ? আসলে শেয়ার ও শেয়ারের দাম কেও সৃষ্টি কর্তা পুরাতনের বিনাশ নতুনের সৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা দেন নি | সময়ের সাথে সাথে শেয়ার বাজারের দামে উত্থান ও পতন দেখা যায় ট্রেডার ও বিনিয়োগকারীদের সেন্টিমেন্ট এবং চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে দামের গতিরোধ ঘটে এবং নতুন সেন্টিমেন্টের সাথে নতুন ট্রেন্ডের সূত্রপাত ঘটে থাকে |
এছাড়াও পড়ুন: শিক্ষানবীশদের ক্যান্ডেলস্টিকের প্রাথমিক গাইড (The Basic Guide of Candlestick Patterns for Beginners)
চলুন আমি আপনাদের একটি সফরে নিয়ে যাই যেখানে আমি আপনাদের জাপানিস Candlestick Reversal অর্থাৎ পরিবর্তনশীল ট্রেন্ডের অগ্রিম আভাস কিভাবে পাবেন তার ওপর সহজ ভাষায় আলোকপাত করবো | আমি বিশ্বাস করি এই ব্লগ সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে রিভার্সাল সম্পর্কে আপনার অনেক ধারণার বিকাশ তো হবেই এবং নতুন এমন কিছু জ্ঞানের সঞ্চয় আপনি করবেন যা অনুশীলন করলে আপনি মার্কেট সাইকোলজির এমন কিছু অংশ আয়ত্ত করতে পারবেন যা ট্রেডিং ও বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার বিকাশ ঘটাবে | যারা টেকনিকাল অ্যানালিসিস নিয়ে পূর্বে চর্চা করেছেন ও যারা বর্তমানে চর্চার মধ্যে রয়েছেন তারা অবশ্যই Candlestick Reversal Patterns সম্পর্কে অবগত তারা এই ব্লগ কে রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন | আর যারা এই টেকনো-কমার্শিয়াল অর্থনীতি ও হিউম্যান সাইকোলজি নির্ভর টেকনিকাল অ্যানালিসিস এর জগতে প্রথম গুটি গুটি পায়ে হাটতে শুরু করেছেন তারাও এই ব্লগের মাধ্যমে কোনো প্রবহমান ট্রেন্ডের আগাম পরিবর্তনের পূর্বাভাস বুঝতে পারবেন |
Candlestick Reversal বলতে কি বোঝায় :
আমরা আগেই দেখেছি যে, জাপান এই ক্যান্ডেলস্টিক পদ্ধতিটি ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে কুক্ষিগত রাখার পর ১৯৮০ র দশকের শেষ ভাগে বিশ্বের সামনে এই পদ্ধিতিটি তুলে ধরেন মার্কিন টেকনিকাল বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞ ” স্টিভ নিসন ” | টেকনিকাল বিশ্লেষক / অ্যানালিস্ট গণ রিভার্সাল পদ্ধতির নির্মাণ ও ব্যবহার শুরু করেছিলেন মার্কেট সাইকোলজি ও চলমান প্রবণতার পরিবর্তনের পূর্বাভাস পাওয়ার উদেশ্যে | অর্থাৎ রিভার্সাল প্যাটার্ন হলো কোনো চলমান প্রবণতার পরিবর্তনের সূত্র |
পাশ্চাত্যের দেশেও কোনো দামের চলমান ট্রেন্ডের পরিবতনের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্যাটার্ন ব্যবহারের প্রচলন ছিল , যথা : ডাবল টপ , ট্রিপল টপ , ডাবল বটম , ট্রিপল বটম , হেড এন্ড সোল্ডার , ইনভার্টেড হেড এন্ড সোল্ডার , আই ল্যান্ড রিভার্সাল ইত্যাদি | রিভার্সাল অর্থাৎ পরিবর্তন কথাটি সোনার পর অনেকেরই মনে হতে পারে সম্পূর্ণ গতি পথ উল্টে বিপরীত গমন , অর্থাৎ চলমান আপ ট্রেন্ড হঠাৎ করে ডাউন কিংবা দামের সংশোধনের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া ট্রেন্ডের আকস্মিক পরিবর্তন হয়ে উর্ধমুখী যাত্রা | আপনাদের জানতে হবে , বুঝতে হবে যে কোনো ভাবেই রিভার্সাল আকস্মিক হতে পারে না | কোনো প্রধান ট্রেন্ডের পরিবর্তন বেশ কিছু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, শক্তিশালী কোনো ট্রেন্ডের মধ্যে হঠাৎ পরিবর্তন কদাচিৎ লক্ষ্য করা যায় | সর্বদা রিভার্সাল সিগনাল যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করবে তা নয় অনেক সময় প্রধান ট্রেন্ডের গতি হ্রাসের ইঙ্গিত ও বহন করে থাকে এই রিভার্সাল | কোনো চলমান ট্রেন্ড সাইকোলজিতে পরিবর্তন কেই এই খানে রিভার্সাল হিসাবে গণ্য করা হয়েছে | মনে রাখবেন যতবার আমি রিভার্সাল শব্দটি ব্যবহার করছি ততবার আমি কোনো ট্রেন্ডের পরিবর্তনের সম্ভাবনার কথা বলছি মাত্র , রিভার্সাল মানে অবিসম্ভাবী ট্রেন্ডের পরিবর্তন মোটেও নয় | বিচক্ষণতার সাথে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে রিভার্সাল প্যাটার্ন চলমান ট্রেন্ডে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে মাত্র | কিন্তু যতক্ষণ না উক্ত পরিবর্তন ঘটছে ততক্ষন ট্রেন্ডের রিভার্সাল হয়েছে বলে গণ্য করা টেকনিক্যালি উচিত নয় |
সহজ ভাষায় বলতে গেলে রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলে অনেক রোড সাইড সিগন্যাল মেনে আপনাকে গাড়ি চালাতে হয় (রাইট টার্ন , লেফট টার্ন , বাম্পার,ইউ টার্ন ইত্যাদি) এখানেও রিভার্সাল চলমান ” ট্রেন্ড পরিবর্তনের সম্ভাবনার মধ্যে দিয়ে চলছে “| একজন বিনিয়োগকারীর উচিত এই রিভার্সাল সংকেত পেয়ে তার নিজের ওপেন পজিশনের পুনর্বিন্যাস করা | রিভার্সালের সংকেতের ওপর নির্ভর করে অনেক প্রকার পজিশন সংযুক্ত এবং বিযুক্ত করণের কৌশলগত ট্রেডিং ও বিনিয়োগ পন্থা প্রচলিত আছে | এই ব্লগের মাধ্যমে আমি পনাদের সেই সকল কৌশল ও পন্থা এবং রিভার্সাল চিহ্নিত করণের উপায় নিয়ে আলোচনা করবো |
টেকনিকাল রিভার্সালের নিয়ম অনুসরণ করে বিনিয়োগ অথবা ট্রেডিং করতে গেলে কোনো রিভার্সাল প্যাটার্নই বিপরীত প্রকার কাজ করার অনুমতি দেয় না | উদাহরণ স্বরূপ ” যদি প্রধান ট্রেন্ড আপ হয় এবং আপ সাইডে কোনো প্রকার টপ রিভার্সাল সিগন্যাল তৈরী হয় তা কখনোই শর্ট করার অনুমতি দেয় না এটি শুধু মাত্র বর্তমান ট্রেন্ডের গতি হ্রাস ও ট্রেডিং সাইকোলজির পরিবর্তণের বার্তা বহন করে থাকে | যেহেতু প্রধান ট্রেন্ড আপ এবং শক্তি শালী ভাবে অবস্থান করছে রিভার্সাল সিগন্যাল শর্ট সেল করার ইঙ্গিত না দিয়ে লং পজিশনের বিলোপ পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি ও ভোলাটিলিটি হ্রাস কেই উল্লেখ করে থাকে | এমত অবস্থায় দামের সংশোধনের পর শক্তি সঞ্চয় করে দামের বাউন্স ব্যাককে কাজে লাগিয়ে লং পজিশনের সূচনা করা শ্রেয় |
দামের দুর্বলতার সময়েও দেখি ভাবে কাউন্টার ট্রেন্ডকে অনুসরণ ওকরে লং পজিশনের সূচনা না করে সামান্য ওপরে গিয়ে যখন দাম নতুন সেল সিগন্যাল প্রদান করবে তখন শর্ট করা উত্তম |
বহু বিস্তারিত অধ্যয়ন করার পর আমি লক্ষ্য করেছি জাপানিজ Candlestick Analysis এর ভেতরে বহু Reversal Pattern উল্লেখ করা আছে | এই ব্লগে আমি ধারাবাহিক ভাবে দেখা যায় এমন গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি Reversal Pattern নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনাদের ট্রেডিং ও বিনিয়োগকে আলাদা মাত্রা দেবে | এছাড়ার Candlestick এর একটি E – BOOK পড়তে পারেন,যেখানে সহজে ও সংক্ষিপ্ত ভাষায় ৩৭ টি Candlestick এর চরিত্র ও তার ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করা রয়েছে|
যদিও আমি পূর্বে উল্লেখ করেছি যে Reversal সিগন্যাল দেখামাত্র কোনো বিপরীত ধর্মী ট্রেডের অভিষেক ঘটানো আদর্শ নয় কারণ কাউন্টার ট্রেন্ডে ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির মাত্রা বেশি থাকে, কিন্তু যেহেতু Candlestick সম্পূন ভাবেই হিউমান ও ট্রেডিং সাইকোলজির ওপর নির্ভর করে নির্মিত হয়েছে তাই যারা রিভার্সাল সিগন্যাল দেখে কাউন্টার ট্রেন্ডে কাজ করতে চান তাদেরকে যথেষ্ট জ্ঞান সম্পন্ন এবং চটপট ট্রেডিং করতে হবে | সাধারণত এই সকল ট্রেড ইন্ট্রাডেতেই সম্পাদিত হয়ে থাকে |
Technical Reversal Pattern গুলিকে বুলিশ এবং বিয়ারিশ দুই প্রকার ভাগে বিভাজিত করা হয়েছে | বুলিশ রিভার্সালের বিপরীত হিসাবে বিয়ারিশ Reversal Pattern এর উল্লেখও Candlestick এর মধ্যে পাওয়া যায় |
পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ Candlestick Reversal Patterns:
Japanese Candlestick এর চর্চা করলে অসংখ বুলিশ ও বিয়ারিশ Reversal Pattern এর সম্পর্কে জানা যায়, সময়ের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন প্যাটার্ন দেখা যায় এবং তাদের চরিত্র বিভিন্ন হয়ে থাকে | বর্তমান এই ব্লগে আমরা যে পাঁচটি Candlestick Reversal Patternনিয়ে আলোচনা করবো সেই গুলি হলো :
১. দোজি
২. হ্যামার
৩. হ্যাঙ্গিং ম্যান
৪. বুলিশ এনগাল্ফিং
৫. বিয়ারিশ এনগাল্ফিং
১. দোজি :
দোজি একটি Candlestick Reversal Pattern যা ক্রস – প্লাস চিহ্নের সমসাময়িক দেখতে হয়ে থাকে | একক দোজিকে নিউট্রাল প্যাটার্ন হিসাবে গণ্য করা হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম | যখন কোনো স্টক – সিকিউরিটির ওপেন এবং ক্লোসিং প্রাইস প্রায় সমসাময়িক হয় তখন সাধারণত আলোচ্য প্যাটার্নকে দোজি প্যাটার্ন হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে | দোজি প্যাটার্নকে প্রায়ই কোনো ট্রেন্ডের ওপরে বা নিচে দেখা যায় যা তৎকালীন বর্তমান ট্রেন্ডের রিভার্সালের সম্ভাবনার আগাম সংকেত বাহক | কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই ট্রেন্ডের মাঝখানেও দোজি প্যাটার্ন দেখা গিয়ে থাকে যা তৎকালীন ট্রেন্ডের ধারাবাহিকতার সম্ভাবনার কথা প্রকাশ করে|
সাধারণ অপেক্ষা বেশি দৈর্ঘের আপ্পার শ্যাডো এবং লোয়ার শ্যাডো যুক্ত দোজিকে ” লং লেগড দোজি / রিক্সো ম্যান ” নামকরণ করা হয়েছে |
বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে দোজি দ্বিধা – অস্হিরতার সংকেত বহন করে | কোনো স্টক – সিকিউরিটির ওপেন থেকে বুলিশ প্রেসারের দ্বারা হাই তৈরী করলেও ওপরের লেভেল থেকে প্রবল সেলিং প্রেসারের আক্রান্ত হয়ে ওপেন অপেক্ষা নিচে চলে আসে এবং পুনরায় সেই সময়ের ক্যান্ডেলের লো থেকে চালকের আসনে বুলিশ ট্রেডারদের আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং ওপেন প্রাইসের পার্শবর্তী অঞ্চলেই ক্লোসিং দেখা যায় |
ওপর ভাবে অনেকক্ষেত্রেই প্রথমে দুর্বলতার এবং পরবর্তীতে সবলতা এবং সর্বশেষে পুনরায় সামান্য দুর্বলতার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দাম ওপেনিং প্রাইসের পশে ক্লোসে আসে | এই ভাবাবেও দোজি প্যাটার্ন গঠিত হতে দেখা যায় | মূল কথা হলো ওপেন ও ক্লোসিংয়ের স্থান সমসাময়িক স্থানে হয়ে থাকবে |
টেকনিকাল চার্টের অনেকক্ষেত্রেই এই দোজি প্যাটার্ন দেখা গিয়ে থাকলেও এটি কোনো কোনো সময়েই রিভার্সালের সরাসরি ইঙ্গিত বহন করে না | কোনো চলমান ট্রেন্ডের ওপরে বার নিচে দেখা গেলে ট্রেন্ডের গতি হ্রাস ও বিশ্রামের কথা উল্লেখ করে থাকে , যা পরিবর্তী কালে দামের সেন্টিমেন্টর পরিবর্তনের সম্ভাবনার কথা প্রকাশ করে | অর্থাৎ কোনো স্থানে দোজি প্যাটার্ন দেখা গেলে সভাওনার সহিত নিজের পজিশনকে ম্যানেজ করাই শ্রেয় বলে মনে করা হয় |
আধুনিক ও উন্নত টেকনিকাল অ্যানালিসিসের যুগে দোজি প্যাটার্নকে সময় ও গঠিত হওয়া স্থানের ভিত্তিতে প্রধানত চারটি ভাগে বিভাজিত করা যায় | যথা :
* স্ট্যান্ডার্ড অথবা ষ্টার দোজি |
* লং লেগড দোজি |
* গ্রেভস্টোন দোজি|
* ড্রাগনফ্লাই দোজি |
২. হ্যামার :
Candlestick এর বিশ্লেষণে হ্যামারকে অন্যতম Reversal Pattern হিসাবে আলাদা স্থান দেওয়া হয়েছে | সাধারণত কোনো ডাউন ট্রেন্ডের বটম অঞ্চলে এই প্যাটার্নটিকে লক্ষ্য করা যায় | এটি একটি বুলিশ Reversal Pattern হিসাবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে | পুঁথিগত ভাবে যখন কোনো সিকিউরিটির ওপেন হাই একই হয় এবং এর আসে পাশেই ক্লোসিং দেখা যায় এবং নূন্যতম Candlestick বডির দ্বিগুন বা তার অধিক লোয়ার শ্যাডো তৈরী হয় তখন তাকে হ্যামার প্যাটার্ন বলা হয় | এই প্যাটার্নটি অনেকটা হাতুড়ির ন্যায় দেখতে হয়ে থাকে বলে এটিকে হ্যামার নামে অবিহিত করা হয়েছে |
বুলিশ Candlestick Pattern গঠিত হতে দেখা গেলে তাকে বুলিশ reversal এর তকমা দেওয়া হয়ে থাকে কারণ ওই নির্দিষ্ট সময়ের সকল দুর্বলতাকে তাচ্ছিল্যের সাথে উড়িয়ে দিয়ে তৎকালীন লো থাকে বাউন্স ব্যাক এবং ওপেনের পার্শবর্তী অথবা তার ওপর ক্লোসিং বুলিশ সেন্টিমেন্টের সরাসরি ইঙ্গিত বহন করে থাকে | লং লোয়ার শ্যাডো বিয়ারিশ ট্রেডারদের প্রভাব দেখালেও লো লেভেল থেকে বাউন্স ব্যাক সম্পূর্ণ বুলিশ পক্ষপাতের নিদর্শন |
Bullish Candlestick Reversal Patterns সম্পর্কে আরো জানতে নীচের ভিডিও দেখুন:
৩. হ্যাঙ্গিং ম্যান :
হ্যামার এর মতো দেখতে হলেও গঠন হওয়ার স্থানের পরিবর্তনের সাথে সাথে মূল চরিত্রের মধ্যেও পরিবর্তন দেখা যায় | নাম থেকেই পরিষ্কার যে এটি একটি বিয়ারিশ reversal pattern| কোনো আপ ট্রেন্ডের সর্বোচ্চ স্তরের দিকে এই হ্যাঙ্গিং ম্যান Candlestick pattern মাঝে মধ্যে লক্ষ্য করা যায় | এটি দামের সম্ভাব্য দুর্বলতার সতর্কবার্তা সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়ে থাকে | এটি মনে রাখা খুবই জরুরি হ্যাংগিং ম্যান মানেই শর্ট পজিশনে এন্ট্রি নেওয়া একদমই উচিত নয় | এই প্যাটার্ন দুর্বলতার আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে মাত্র |
এই প্যাটার্ন হ্যামারের ন্যায় দেখতে হয় | ওপেন, হাই এবং ক্লোসিং প্রায় একই হলেও লোয়ার শ্যাডোকে রিয়েল বডির অপেক্ষা দ্বিগুন বা তার অধিক হওয়া কাম্য |
একটি দীর্ঘ্য আপ ট্রেন্ডের ওপরের দিকে এই হ্যাঙ্গিং ম্যান প্যাটার্ন দেখা গেলেও এটি বুলিশ নয় বিয়ারিশ সিগন্যাল প্রদান করে কারন, ওপেন পরবর্তী সময়ে বিয়ারিশ ট্রেডারদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লম্বা লোয়ার শ্যাডো নির্মিত হয় | পরবর্তীতে মূল আপ ট্রেন্ডের কারণে আপ পক্ষপাত দেখা গেলেও ওপরের দিকে রেঞ্জের মধ্যে আকর্ষণীয় পরিবর্তন অর্থাৎ উন্নতি দেখা যায় না | যা পুনরায় বিয়ারিশদের প্রভাবের কথাই বলে থাকে |
Bearish Candlestick Reversal Patterns সম্পর্কে আরো জানতে নীচের ভিডিও দেখুন:
৪. বুলিশ এনগাল্ফিং প্যাটার্ন :
কোনো ডাউনট্রেন্ডের নিম্ন স্থানে অর্থাৎ বটমে দুটি ক্যান্ডেলের সমন্বয়ে এই বুলিশ এনগাল্ফিং প্যাটার্ন নির্মিত হতে দেখা গিয়ে থাকে |
ছোট বিয়ারিশ ক্যান্ডল ( প্রথম দিন )
বড় বুলিশ ক্যান্ডল ( দ্বিতীয় দিন )
প্রথম দিনের দুর্বলতার কারণে দ্বিতীয় দিনে গ্যাপ ডাউন ওপেনিং দেখা গেলেও বিয়ারিশদের প্রভাবকে নস্যাৎ করে বুলিশ ট্রেডারগণ নিম্ন দাম থেকে বাজারের হাল হর্তে শুরু করে এবং স্বল্প সময়েই সমগ্র দিক বুলিশ সেন্টিমেন্ট দ্বাহ্রা প্রভাবিত হয়ে গ্যাপ ডাউন কভার করে ফেলে | এবং আলোচ্চ্চ্য সেশনে প্রথম দিনের ক্যান্ডলকে সম্পূর্ণ ভাবে গ্রাস করে এবং প্রথম দিনের হাইকে অতিক্রম করে এবং কিছু ক্ষেত্রে হাইয়ের পাশেই ক্লোসিং প্রদান করে |
দ্বিতীয় দিনের বুলিশ ক্যান্ডলের মধ্যেই সকল পসিটিভ শক্তি অন্তর্নিহিত থাকে, যা দীর্ঘ দুর্বলতাকে এক লহমায় পসিটিভ সেন্টিমেন্ট দ্বারা পরাস্ত করে বিয়ারদের মার্কেট থেকে বিতাড়িত করে বাজারের / স্টকের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরিচালন করে থাকে |
বাংলায় টেকনিকাল অ্যানালাইসিস শেখার জন্য বেসিক টেকনিকাল অ্যানালাইসিস কোর্স এ নথিভুক্ত হন|
৫. বিয়ারিশ এনগাল্ফিং প্যাটার্ন :
কোনো প্রবল আপ ট্রেন্ডের উচ্চ স্থানে অর্থাৎ টপ অঞ্চলে দুটি ক্যান্ডেলের সমন্বয়ে এই বিয়ারিশ এনগাল্ফিং প্যাটার্ন নির্মিত হতে দেখা যায় |
স্বল্প দৈর্ঘের বুলিশ ক্যান্ডেল ( প্রথম দিন )
বড় বিয়ারিশ ক্যান্ডেল ( দ্বিতীয় দিন )
সাধারণত দেখা যায় যে প্রথম দিনের বুলিশ ক্যান্ডেলটিকে দ্বিতীয় দিনের বিয়ারিশ ক্যান্ডেল সম্পূর্ণ ভাবেই গ্রাস করে থাকে | পূর্ববর্তী বুলিশ প্রেসারের কারণে দ্বিতীয় দিনেও গ্যাপ আপ ওপেনিং দেখা গেলেও দিনের উচ্চ মাত্রা থেকে প্রবল সেলিং প্রেসার অর্থাৎ প্রফিট বুকিংয়ের কারণে দামের মধ্যে তীব্র পতন পূর্ববর্তী দিনের লো কে ভেঙে দিয়ে দ্বিতীয় দিনের দামকে নিচে নিয়ে এসে ক্লোসিং প্রদান করে থাকে |
দ্বিতীয় দিনের বিয়ারিশ ক্যান্ডলের মধ্যেই সকল নেগেটিভ শক্তি অন্তর্নিহিত থাকে, যা দীর্ঘ পূর্ববর্তী সবলতাকে এক লহমায় নেগেটিভ সেন্টিমেন্ট দ্বারা পরাস্ত করে বুলিশদের মার্কেট থেকে বিতাড়িত করে বাজারের / স্টকের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরিচালন করে থাকে |
উপসংহার : –
এই ব্লগের মাধ্যমে আমি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ Candlestick Reversal Pattern এর সাথে আপনাদের প্রাথমিক পর্যায়ের পরিচয় করালাম | এছাড়াও Candlestick এর মধ্যে অসংখ reversal pattern এর উল্লেখ আছে | আমি ধীরে ধীরে প্রত্যেকটি প্যাটার্ন সম্পর্কে তার চরিত্র এবং কাজ ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো পৃথক পৃথক ব্লগের মাধ্যমে |
আপনাকে ফিনান্স ও শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে সাহায্য করার জন্য আমরা সর্বদা সচেষ্ট | শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে যে কোনো প্রকার অনুসন্ধান ও প্রশ্নের জন্য নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে পাঠান |দ্রুততার সাথে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সাহায্য করার প্রচেষ্টায় আমরা প্রস্তুত |
very much helpful
Hi,
We are glad that you liked our post.
Thank you for Reading!
Very helpful and very much easy to learn.
Hi,
We really appreciated that you liked our blog! Thank you for your feedback!
Keep Reading!