ভূমিকা :-
রিভার্সাল অর্থাৎ পরিবর্তন , আমি যেরকম আমার আগের ব্লগে উল্লেখ করেছি যে আহ্নিক গতির ওপর নির্ভর করে যেরকম পৃথিবীর দিন রাত্রি ঘটে থাকে এবং বার্ষিকগতি একটি বৎসরের গণনা করে সময়কে এগিয়ে নিয়ে যায় সেই রকম ভাবে ফিনান্সিয়াল মার্কেটেও ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ওপর নির্ভর করে মোমেন্টাম এবং ট্রেন্ডের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় |
প্রকৃত পক্ষে বার রিভার্সাল হলো এমন একটি বিষয় যেখানে একটি বার বা বারের সমষ্টি যারা চলমান ট্রেন্ডের সম্ভাবনাময় পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে | কোনো চলমান আপ ট্রেন্ডের উচতম অঞ্চলে অথবা কোনো চলমান ডাউন ট্রেন্ডের নিম্নের অঞ্চলে এই বার রিভার্সাল দেখা গিয়ে থাকে |
বেশি মাত্রায় এই ব্লগের লেখাটিকে অলংকৃত না করে সরাসরি বার রিভার্সাল ও তার বিভিন্ন ধরণ সম্পর্কে আলোচনায় যাওয়াকেই উত্তম বলে মনে করি | আসুন আমি আপনাদের আজকে রিভার্সাল নিয়ে এমন একটি যাত্রায় নিয়ে যাই যেখানে আপনি সহজেই বার চার্ট ব্যবহার করে ট্রেডিং সাইকোলজির পরিবর্তনের আগাম আভাস পেতে পারবেন |
বার চার্টের সাথে সাধারণ পরিচয়ের জন্য আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে : বার (OHLC) চার্টের সাথে পরিচয় (Introduction to OHLC Chart )
আজকের এই ব্লগে আমরা যে নয় (৯) প্রকার বার রিভার্সালের ব্যাপারে আলোচনায় আলোকপাত করবো সেই গুলি হলো যথাক্রমে :
১. কি রিভার্সাল
২. পারফেক্ট আপওয়ার্ড বার রিভার্সাল
৩. টু ডে রিভার্সাল
৪. আইল্যান্ড রিভার্সাল
৫. টুইজার টপ
৬. টেইল বার
৭. থ্রী সি রিভার্সাল
৮. টপিং আউট বার
৯. লো লিভিং বার
ব্লগের লেখার শুরুতেই আমি উল্লেখ করছি যে কোন আপ ট্রেন্ডের ক্ষেত্রে ট্রেন্ডের উচ্চতম অঞ্চলে এবং ডাউন ট্রেন্ডের ক্ষেত্রে ট্রেন্ডের সর্বনিম্ব অঞ্চলে বার রিভার্সাল দেখা গিয়ে থাকে | এই ক্ষেত্রে আপ ট্রেন্ডের সময় ট্রেন্ডের সর্বোচ্চ অঞ্চলের ওপরের অংশে দাম রেসিস্টেন্সের সম্মুখীন হয় এবং ডাউন ট্রেন্ডের সর্বনিম্ন অংশের নিচে দাম সাপোর্ট খুঁজে পায়| এই কারণেই কোনো চলমান ট্রেন্ডের মধ্যে সেন্টিমেন্টের পরিবর্তনঘটে থাকে যা সম্ভাবনাময় রিভার্সালের কথা উল্লেখ করে |
১. কি রিভার্সাল (Key Reversal) :
দীর্ঘ সময়ের দামের সংশোধনের পর অর্থাৎ ডাউন ট্রেন্ডের পর কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই কী রিভার্সাল দেখা যায় | যখন কোনো সময় তীব্র সেলিং প্রেসারের কারণে দাম ধারাবাহিক ভাবে লোয়ার টপ এবং লোয়ার বটম নির্মাণ করে এবং প্রত্যহ ওপেনিং অপেক্ষা দুর্বল ক্লোসিং প্রদান করে থাকে তখন হঠাৎ সেন্টিমেন্টের মধ্যে পরিবর্তন আসলে এই প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায় |
প্রবল দুর্বলতার কারণে বেশিরভাগক্ষেত্রেই গ্যাপ ডাউন ওপেন টেকনিক্যালি গ্রহণযোগ্য বিয়ারিশ সন্মান পেয়ে এসেছে | এই ক্ষেত্রেও ধারাবাহিক সেলিং এর কারণে তৈরী হওয়া দুর্বলতার ওপর ভর করে কখনো গ্যাপ ডাউন ওপেনের সাক্ষী আমরা থাকতে পারি | গ্যাপ ডাউন ওপেনিংয়ের দিনে সেলিং প্রেসার জারি থেকে দামের মধ্যে দুর্বলতা দেখা গেলেও হঠাৎ বুলিশ ট্রেডারগণের সক্রিয়তা বৃদ্ধি প্রবল বুলিশ প্রেসার তৈরী করে যার সামনে পরে চলমান বিয়ারিশ সেন্টিমেন্ট প্রতিহত হয়ে পরে | প্রবল শক্তিতে দিনের সর্বনিম্ন স্থান থেকে বুলিশ ট্রেডারগণ প্রভাব বিস্তার করার কারণে দীর্ঘ চলমান বিয়ারিশ সেন্টিমেন্ট নতুন কর্মশক্তিপূর্র্ণ বুলিশ সেন্টিমেন্টের সামনে বন্দি হয়ে পরে এবং বুলিশ ট্রেডারগণ চালকের আসনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে থাকে | আকস্মিক বুলিশ / ক্রয়ের প্রেসার বৃদ্ধির কারণে দামের মধ্যে বিপরীতমুখী মনোভাব সৃষ্টি হয় এবং চলমান বিয়ারিশ সেন্টিমেন্ট “ U ” টার্ন নিয়ে পসিটিভ ট্রেডিং শুরু করে | প্রথমত দিনের ওপেন লেভেলকে অতিক্রম করার পর ডাউন সাইড গ্যাপকে বুলিশ ট্রেডিং কভার করে ধীরে ধীরে গত দিনের লো কে অতিক্রম করে সেই দিনের ক্লোসিং অথবা তার পার্শবর্তী উচ্চতম অঞ্চলে নিজেকে ধরে রাখে | কিছু ক্ষেত্রে এই আকস্মিক সেন্টিমেন্টের পরিবর্তন দামের মধ্যে প্রবল বুলিশ প্রেসারকে তীব্র চাপের সাথে তুলে ধরে শেষ দিনের সর্বোচ্চ মাত্রাকেও অতিক্রম করে থাকে |
এক্ষেত্রে প্যাটার্নটি ট্রেন্ড রিভার্সেলকে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও নিশ্চিত করে | ট্রেন্ড রিভার্সালের দিন বিয়ারিশ সেন্টিমেন্টের দ্বারা প্রভাবিত অনেক মানুষজন বুলিশ পক্ষপাতের কারণে আটকা পরে যাওয়ার কারণে এই রিভার্সালের দিনকে “বিয়ার্স ট্র্যাপিং ডে ” বলেও নামকরণ করা হয়েছে |
২. পারফেক্ট আপওয়ার্ড বার রিভার্সাল (Introduction To Bar Chart Reversal Pattern):-
দুটি বারের সমন্বয়ে নির্মিত এই বার রিভার্সাল প্যাটার্নটি দুই দিনের কোনো সিকিউরিটির দামের চরিত্রকে উপস্থাপিত করে থাকে | কোনো দীর্ঘ বা মাঝারি মানের দামের কারেকশনের পর আমরা অনেক টেকনিক্যাল চার্টের মধ্যেই এই পারফেক্ট আপ ওয়ার্ড বার রিভার্সাল দেখতে পাওয়া যায় | যেহেতু এই রিভার্সালিটি সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য দুটি বারের প্রয়োজন তাই এই দুটি বারের মধ্যে বিশেষ চরিত্রগত বিশেষত্বের ওপর নির্ভর করেই এই বার রিভার্সাল প্যাটার্ন গঠিত হয়ে থাকে |
এই বার রিভার্সালের ক্ষেত্রে ডাউন ট্রেন্ডের শেষ নেগেটিভ বারের অপেক্ষা রিভার্সাল বারের চরিত্রগত বৈপরীত্ব নজরকাড়া মতন | প্রথম বার অপেক্ষা দ্বিতীয় বারের মধ্যে উচ্চতম হাই এবং নিম্নতম লো লক্ষ্য করা যায় | ডাউন ট্রেন্ডকে অনুসরণ করে দুর্বল ওপেনিংয়ের সাথে দিনের শুরু করার পরে দামের মধ্যে সংশোধন দেখা গেলেও সমষ্টিগত বুলিশ সেন্টিমেন্টের চাপে পরে চলমান দুর্বল সেন্টিমেন্ট পরাস্ত হয়ে পরে এবং বুলিশ ট্রেডারগণ দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকার পরে পুনরায় চালকের আসনে বসে ট্রেডিংকে পরিচালিত করতে থাকে |বেশ দ্রুততার সাথে চলমান দুর্বলতাকে সরিয়ে দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবেই বুলিশ পক্ষপাতের একাধিপত্য নিয়ে ট্রেডিং রিভার্সালের সম্ভ্যাবনা তৈরী করে উর্ধমুখী যাত্রা করতে থাকে | দীর্ঘ সময়ের পর সবলতার লক্ষণ দেখতে পেয়ে বেশি মাত্রায় বুলিশ ট্রেডারদের অংশগ্রন উর্ধমুখী মোমেন্টামকে সহায় করার জন্য বিয়ারিশ ট্রেডিং সেন্টিমেন্ট প্রায় তৎকালীন সময়ের জন্য বিনষ্ট হয়ে পরে এবং ধীরে ধীরে পূর্ববর্তী দিনের বারের লো , ক্লোস , বডি এবং ওপেন , হাই সকল কিছুকেই গ্রাস করে ফেলে | এই বুলিশ প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে চলমান ডাউন ট্রেন্ডের বিপরীতমুখী মনোভাবের উন্মোচনের সাথে পূর্ববর্তী দিনের নেগেটিভ বারকে গ্রাস করে পূর্ববর্তী নেগেটিভ দিনের হাইকে অতিক্রম করে সবল / পসিটিভ ক্লোসিং প্রদানের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই এই প্যাটার্নটিকে এনগাল্ফিং প্যাটার্ন হিসাবে নামকরণ করা হয়েছে | এটি মনে রাখে খুবই জরুরি যে এই বুলিশ এনগাল্ফিংয়ের সম্পূর্ণ অনুমোদনের জন্য পূর্ববর্তী বারকে সম্পূর্ণরূপে এনগাল্ফ করলেই হবে না ওই বারের হাইয়ের ওপর ক্লোসিংও প্রদান করাটাও ভীষণই জরুরি | অনেক বিশেষজ্ঞই এই রিভার্সেলকে “কি রিভার্সালের” সম্প্রসারিত প্রতিরূপ হিসাবে মানকরণ করেছেন এবং অনেকক্ষেত্রেই এই নামকরণকে গ্রাহ্য করা হয়েছে |
৩. টু ডে রিভার্সাল (2 Day Bar Reversal) : –
নামকরণ থেকেই পরিষ্কার হয়েছে যে এই বুলিশ রিভার্সালের ক্ষেত্রেও দুই দিনের বারের একান্ত প্রয়োজন রয়েছে | অর্থাৎ এই বার রিভার্সালটি সম্পূর্ণ রূপ নেওয়ার জন্যও দুটি বারের সমষ্টিগত চরিত্রের বিচার একান্ত প্রয়োজন | দীর্ঘকালীন ডাউন ট্রেন্ড চলাকালীন অনেক সময় এই “টু ডে বার রিভার্সাল ” প্যাটার্ন দেখতে পাওয়া যায় | এই বার রিভার্সালের ক্ষেত্রে দুটি বারের আয়তন / সাইজ প্রায় সমান হলেও দুটির বারের মধ্যে প্রকৃতি অর্থাৎ চারিত্রিক বৈপরীত্য রিভার্সালের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা নিয়ে থাকে |
ডাউন ট্রেন্ডকে অনুসরণ করে প্রথম দিন নেগেটিভ ক্লোসিংয়ের ( হায়ার ওপেন লোয়ার ক্লোস ) সাক্ষী থাকলেও দ্বিতীয় দিনের ট্রেডিং অধিবেশনে বুলিশ পক্ষপাতের কারণে ওপেনিংয়ের থেকে বেশি অঙ্কে ক্লোসিং চলমান দুর্বলতার প্রতিরোধের কথা তুলে ধরে | এই রিভার্সালের ক্ষেত্রে এটি মনে রাখা খুবই জরুরি যে প্রথম দিনের বার চলমান দুর্বলতাকে অনুসরণ করে নেগেটিভ ক্লোসিং দিলেও দ্বিতীয় দিনের বারকে অবশ্যই পসিটিভ ক্লোসিং দিতে হবে এবং প্রথম দিনের ক্লোসিংয়ের ওপর ক্লোসিং প্রদিত হলে উত্তম অথবা যদি প্রথম দিনের হাই এর পার্শবর্তী অঞ্চলে চলসিং প্রদিত হতে দেখা যায় তাহলে তা সর্বোত্তম “টু ডে রিভার্সাল ” হিসাবে গ্রাহ্য হবে |
৪. আইল্যান্ড রিভার্সাল (Island Reversal) :-
আইল্যান্ড বার রিভার্সাল প্যাটার্ন হলো একটি বটম রিভার্সাল প্যাটার্ন | যদিও কদাচিৎ এই প্যাটার্ন নজরে আসে তবুও এই প্যাটার্নের গুরুত্ব অপরিসীম | টেকনিক্যালি দেখতে গেলে এই প্যাটার্ন সম্পূর্ণ হতে গেলে সাধারণত দুটি বারের প্রয়োজন হলেও এটি মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি যে নির্দিষ্ট বার দুটির চরিত্র একে অপরের বিপরীত হয়ে থাকে | কোনো প্রকার টপ তৈরির পরবর্তী সময়ে দামের সংশোধনের পর এই প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায় |
এই প্যাটার্নের বৈশিষ্ট হলো গ্যাপ , অর্থাৎ প্যাটার্নটির প্রধান দুই বারের গঠন হওয়ার শুরু ও শেষ হওয়ার মুলে গ্যাপের গুরুত্ব অপরিসীম |
চলমান ডাউন ট্রেন্ড এবং রিভার্সালের পরবর্তী আপ ট্রেন্ডের সময়ে মধ্যবর্তী দুটি প্রধান বার গ্যাপের মাধ্যমে মূল ট্রেন্ডের থেকে পৃথক হয়ে থাকে | যেহেতু প্রধান দুটি বার মূল ট্রেন্ড গুলির থেকে কিছুটা গ্যাপের কারণে বিচ্ছিন্ন থাকে তাই এটিকে ইলান্ড রিভার্সাল বলা হয়ে থাকে |
টেকনিকাল অনেক বইয়েই এই প্যাটার্নটিকে পরিবর্তিত ” টু ডে রিভার্সাল ” এর আখ্যা দেওয়া হয়েছে |
৫ . টুইজার টপ (Tweezer Top) : –
তিনটি বারের সমন্বয় তৈরী টুইজার টপ হলো একটি টপ বার রিভার্সাল প্যাটার্ন |
অন্তর্নিহিত প্রধান আপ ট্রেন্ডকে জারি রেখে প্যাটার্ন নির্মাণের প্রথম দিন বার আপ ট্রেন্ড গঠন করে | দীর্ঘ আপ ট্রেন্ডের পর সামান্য সেলিং প্রেসারের কারণে দামের মধ্যে দুর্বলতার সৃষ্টি হয় যার কারণে গ্যাপ ডাউন ওপেন হয় যা লোয়ার টপ এবং লোয়ার বটমের সৃষ্টি করে থাকে | প্যাটার্নের তৃতীয় দিন পুনরায় বুলিশ পক্ষপাতের ওপর নির্ভরকরে স্টকের দাম পুনরায় এক দিনের পূর্বে নির্মিত টপ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওপরে উঠতে থাকে, কিন্তু সদ্য নির্মিত টপ জোন থেকে পুনরায় রেসিস্টেন্সের সম্মুখীন হয়ে থাকে | চার্টের হিসাবে অনেকে এই ক্ষেত্রে দামের এই এক দিনের গ্যাপে রেসিস্টেন্স পাওয়াকে ডাবল টপ হিসাবে মনে করলেও টেকনিক্যাল ব্যাকরণ মেনে এটিকে ডাবল টপ হিসাবে গণ্য করা যায় না | কারণ একটি ডাবল টপকে গণ্য করার জন্য দুটি টপের মধ্যে নূন্যতম তিন মাস সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে মাত্র এক দিনের গ্যাপ লক্ষ্য করা যায় |
যেহেতু এটি একটি টপ রিভার্সাল প্যাটার্ন তাই এই প্যাটার্ন দামের সম্ভাব্য দুর্বলতার আগাম সংকেত বহন করে থাকে |
তৃতীয় দিনের পরবর্তী সময়ে প্যাটার্নের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ লোয়ার টপ লোয়ার বটম দিনের লোয়ার লেভেলকে ভেঙে দিলে দামের মধ্যে দুর্বলতা অবিসম্ভাবী হয়ে পরে |
৬. টেইল বার (Tail Bar) :-
একটি টিপিক্যাল গুরুত্বপূর্ণ বার রিভার্স প্যাটার্ন হলো এই টেইল বার রিভার্সাল | দীর্ঘ ডাউন ট্রেন্ড চলাকালীন কোনো একদিন বাজারের কোনো বিশেষ খবর বা আন্তর্জাতিক কোনো কারণে
স্টকের দামের মধ্যে প্রবল দুর্বল সংকেত পতনের উন্মেষ ঘটায় যা প্রবল সেলিং প্রেসারে রূপান্তরিত হয়ে পূর্ববর্তী ১৩ টি বারের গড় অপেক্ষা বেশি মাত্রায় পতন ঘটিয়ে থাকে |
এই বিশেষ দুর্বল দিনে দাম ওপরে ওপেন হলেও দিনের সর্ব নিম্নতর কাছে ক্লোসিং প্রদান করে | প্রবল দুর্বলতার পরবর্তী দিন খুব ক্ষুদ্র হলেও দীর্ঘ ডাউন বারের মধ্যে একটি পসিটিভ বার লক্ষ্য করা যায় , যা ইনসাইড বার নামে অভিহিত | যদি এই সামান্য পসিটিভ শক্তিকে অনুসরণ করে দামের মধ্যে হাইয়ার টপস এবং বটম লক্ষ্য করা যায় তাহলে বুঝতে হবে দাম স্বল্প মেয়াদি হলেও বটম তৈরী করেছে |
বাংলায় Technical Analysis শিখতে আপনি বেসিক টেকনিকাল অ্যানালাইসিস কোর্স
নথিভুক্ত হণ|
৭. থ্রী C রিভার্সাল বার (Three C Reversal Bar):-
এটি একটি টপ রিভার্সাল প্যাটার্ন | তিনটি বারের সমন্বয়ে নির্মিত এই প্যাটার্ন স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ডাউন সাইড রিভার্সালের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে |
প্রত্যহ যখন হাইয়ার বটম হাইয়ার টপ তৈরী করতে করতে যখন কোনো স্টক আপ ট্রেন্ড বজায় রাখে তখন ট্রেন্ডের টপ এরিয়াতে অনেক সময় এই রিভার্সালের সাক্ষী আমরা হতে পারি | ট্রেন্ডের টপ এরিয়াতে হাইয়ার বটম হাইয়ার টপ তৈরির পরিবর্তে কখনো কখনো ওম তিন দিন দেখা যায় যা আপ ট্রেন্ড বজায় রাখলেও একটির ক্লোসিং তার পূর্ববর্তী ক্লোসিং অপেক্ষা কম হয় |
যেহেতু এই রিভার্সালিটি সম্পূর্ণ ভাবেই ক্লোসিং প্রাইসের গণনা ও তার বৈশিষ্ট নির্ভর তাই জন্য এই রিভার্সাল প্যাটার্নের নাম “থ্রী C রিভার্সাল “
আপ ট্রেন্ড বজায় রেখে স্বল্প রেঞ্জ নির্ভর এবং পূর্ববর্তী ক্লোসিং অপেক্ষা কম মাত্রায় ক্লোসিং স্বল্প সময়ের জন্য হলেও রিভার্সালের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে |
যদি চতুর্থ দিনে দুর্বলতার আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণিত করে দাম লোয়ার টপ এবং লোয়ার বটম তৈরী করে তাহলে শর্ট টার্মের জন্য দাম এবং মোমেন্টাম রিভার্সালের সম্ভাবনা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় |
৮ . টপিং আউট বার (Topping Out Bar): –
টপিং আউট বার হলো ওপর একটি টপ রিভার্সাল প্যাটার্ন | হাইয়ার টপ হাইয়ার বটম কে অনুসরণ করে আপ ট্রেন্ড পরিণত হয়ে গেলে অনেক সময় এই রিভার্সাল প্যাটার্ন দেখা গিয়ে থাকে যাডাউন ট্রেন্ডের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে |
আপ ট্রেন্ড চলার সময় ট্রেন্ডের ওপরের লেভেলের দিকে হায়ার আর টপ হায়ার বটম বজায় থাকলেও দাম নিজের সর্বোচ দৈনিক লেভেলকে ধরে রাখতে পারেনা তার ফলে টপ লেভেলের থেকে বেশি কিছুটা দামের সংশোধন নজরে আসে এবং পূর্ববর্তী দীর্ঘ আপ ট্রেন্ডের দৈনিক বারের বৈশিষ্টকে প্রায় চূর্ণ করেই টপ অপেক্ষা নিচে ক্লোসিং প্রদান করে |
দৈনিক বারের মধ্যে তিন দিনের টপ লেভেলকে হোল্ড করতে না পারা স্টকের মধ্যে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও দুর্বলতার উন্মেষ ঘটায় যা দামের রিভার্সালের সূত্রপাত ঘটিয়ে থাকে |
৯. লো লিভিং বার (Low Leaving Bar): –
এটি একটি বটম রিভার্সাল প্যাটার্ন | লোয়ার টপ লোয়ার বটম বজায় রেখে ডাউন ট্রেন্ড চলাকালীন এই রিভার্সাল প্যাটার্ন কখনো সখনো দেখতে পাওয়া যায় | প্রত্যহ ডাউন ট্রেন্ডের বৃদ্ধি ঘটিয়ে দামের মধ্যে সংশোধন দেখা যায় এবং দৈনিক সর্বনিম্ন মাত্রার পাশে ক্লোসিং চলমান ডাউন ট্রেন্ডের সবলতা বৃদ্ধি করে থাকে |
এই চলমান ডাউন ট্রেন্ডের কোনো একদিন নিজের দুর্বল বৈশিষ্টকে অনুসরণ করে নেগেটিভ রেঞ্জের বৃদ্ধি ঘটালেও দৈনিক সর্ব নিম্ন মাত্রা থেকে বাউন্স ব্যাক দুর্বলতার মাত্রাকে রোধ করে দেয় | দৈনিক সর্বনিম্ন মাত্রার থেকে ২৫ % বা তার অধিক বাউন্স ব্যাক দামের সংশোধনের গতিতে স্থগিতাদেশ প্রদান করে থাকে যা স্বল্প সময়ের জন্য হলেও রিভার্সালের সম্ভাবনাকে প্রবল করে তোলে |
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের সম্পর্কে জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে এই লিঙ্কটি : শিক্ষানবীশদের ক্যান্ডেলস্টিকের প্রাথমিক গাইড (The Basic Guide of Candlestick Patterns for Beginners)
উপসংহার :-
এই ব্লগের মাধ্যমে আপনাদের বার চার্টের গুরুত্বপূর্ণ রিভার্সালের কথা তুলে ধরে আগাম রিভার্সেলকে অনুধাবন করার প্রথম ধাপের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি | আশা করি এই রিভার্সাল প্যাটার্ন গুলি দৈনন্দিনের টেকনিকাল চার্টের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে আপনাদের কাজে আসবে |বাংলায় candlestick patterns সম্পর্কে আরও জানতে এই ই-বুকটি পড়তে পারেন|
এবং আগাম মোমেন্টাম এবং ট্রেন্ডের রিভার্সাল বোঝা এবং বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের সাহায্য করবে |আপনাকে ফিনান্স ও শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে সাহায্য করার জন্য আমরা সর্বদা সচেষ্ট |
শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে যে কোনো প্রকার অনুসন্ধান ও প্রশ্নের জন্য নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে পাঠান |দ্রুততার সাথে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সাহায্য করার প্রচেষ্টায় আমরা প্রস্তুত |