ভূমিকা : –
আমরা মানুষ, মনুষ্যত্ব থাকার কারণেই আমরা মানুষ নামের অধিকারী | জীবনে চলার ক্ষেত্রে বিচার , বিবেচনা , বিশ্লেষণ প্রভৃতি জিনিস আমরা ধারাবাহিক ভাবে করে থাকি | একটি বাচ্চার জন্ম থেকে শুরু করে শৈশব , কৈশোর , যৌবন বার্ধক্য সকল কিছুই প্রাকৃতিক নিয়মে শৃঙ্খলা মেনে চলতে থাকে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে বিচার , বিবেচনা , বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা সেই জীবনের রাস্তাকে মসৃন ও প্রশস্থ করে তোলার চেষ্টা করে থাকি |
জৈবিক চাহিদার সাথে অর্থনৈতিক চাহিদার তাল মেলাতে গিয়ে বেশির ভাগ মানুষই বিনিয়োগ ও ট্রেডিং এর সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকে | যে কোনো দ্রব্যের দামের চারিত্রিক বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ দামের পূর্বাভাস পাওয়ার জন্য মানুষ উক্ত দ্রব্যের দামের ফান্ডামেন্টাল ও টেকনিকাল বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে থাকে |
আধুনিক দ্রুত গতির জীবন যাত্রার সাথে তাল মেলানো এবং অনেক ক্ষেত্রেই সহজ বোধ্য হওয়ার কারণে ফান্ডামেন্টাল অপেক্ষা টেকনিকাল অ্যানালাইসিস মানুষের মনে সহজে স্থান করে নিয়েছে বেশ কিছু দশক ধরেই , এবং বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে তা দিনে দিনে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হচ্ছে|
সাধারণত কোনো দ্রব্যের দাম ও তার পরিসংখ্যান সংক্রান্ত তথ্যের সংমিশ্রনের দ্বারাই টেকনিকাল অ্যানালাইসিস করা হয়ে থাকে | ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস এর ন্যায় ভবিষ্যৎ দামের পূর্বাভাস ও তার গতি প্রকৃতির আগাম আভাস পাওয়ার প্রয়োজনেই মানুষ এই বিশ্লেষ্যনাত্বক টেকনিকাল পদ্ধতির প্রয়োগ করে থাকে | ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস অপেক্ষা টেকনিকাল অ্যানালাইসিস এর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় | বহু ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট ও সেই সংক্রান্ত বিস্তর পড়াশোনা , তথ্যের বিশ্লেষণ অনেক সময় সাপেক্ষ কিন্তু টেকনিকাল অ্যানালিসিসে শুধুমাত্র দামের চারিত্রিক বৈশিষ্ট ও তার মুভমেন্ট , সাইকোলজিই প্রাধান্য পেয়ে থাকে | বিভিন্ন সময়ে দেশে বিদেশে অনেক বিশ্লেষণের পর অনেক টেকনিকাল তত্ত্বের কথা আমরা শুনে থাকি | কোনো ক্ষেত্রে শুধু দামের মুভমেন্ট ও সাইকোলজি অথবা কিছু ক্ষেত্রে দামের মুভমেন্ট ও সাইকোলজির সাথে তাল মিলিয়ে নির্মিত ইনডিকেটর এর সাহায্যও নেয়া হয়ে থাকে | এবং অনেক স্থানেই দাম , মুভমেন্ট , সাইকোলজি এবং ইনডিকেটর এর সহযোগে বিশেষ পন্থার অনুসরণ করা হয়ে থাকে |
আধুনিক টেকনিকাল অ্যানালাইসিসের জগতে candlestick বিশ্লেষণ নিজের পৃথক ও বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে নিজ গুন্ ও বিশেষ্যত্বের ওপর নির্ভর করেই | প্রচলিত টেকনিকাল পদ্ধতি লাইন চার্ট , বার চার্ট, এরিয়া চার্ট উপস্থিত থাকলেও কোনো দামের সকল উপাদান ( ওপেন – লো – হাই – ক্লোস ) ও ট্রেডিং সাইকোলজির সম্পূর্ণ প্রতিফলন রঙের মাধ্যমে Candlestick Chart এর মধ্যে উপস্থিত থাকে তাই এই বিশেষ বিশ্লেষণ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়েছে |
শর্ট টার্ম ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভাবে সাফল্য লক্ষ করা গেলেও প্রতিটি টাইম ফ্রেম যথা ( ১ মিনিট -১৫ মিনিট -৩০ মিনিট – ১ ঘন্টা -১ দিন – সাপ্তাহিক – মান্থলি ) প্রতিটি ক্ষেত্রেই Candlestick এর উপযোগিতা আজকে সর্বৈব ভাবে গৃহীত হয়েছে |
Candlestick এর ইতিহাস :-
টেকনিকাল Candlestick এর ব্লগের এই বিশেষ অংশের মাধ্যমে Candlestick এর উৎপত্তির ইতিহাস ও বিশ্বব্যাপি তার সমৃদ্ধির বিষয় সমূহের সম্পর্কে জানতে পারবেন | যারা স্বল্প কথায় এই বিষয়ে বিশেষ তথ্য লাভ করতে চান আমি মনে করি এই অংশ পাঠের মাধ্যমে আপনি এমন কিছু জানতে পারবেন যা বাংলা ভাষায় লিখিত কোনো টেকনিকাল ব্লগে আপনি এর আগে কোনো দিনও দেখেননি ও পাঠ করেননি | বহু টেকনিকাল বই ও জার্নালের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত ভাবে সমগ্র অংশের নিগুঢ় সত্তাটিকে তুলে ধরে কাজের উপযোগী করে তোলা হয়েছে |
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় ১৭০০ শতকে জাপানে Candlestick এর প্রচলন হয়েছিল | বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে পঠন পাঠন করলে দেখা যায় ১৫০০-১৬০০ এই একশত বছর জাপান বহু ঝড় ঝঞ্ঝা – যুদ্ধ – আক্রমণের শিকার হয়েছিল | এই এক শতকব্যাপী যুদ্ধ ও অরাজকতা পর জাপানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পরে | অনাহার – গৃহযুদ্ধ কোনো কিছুই পিছু ছাড়ছিল না, দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক গঠন বিনষ্ট হয়ে পড়েছিলো এই সময়ে | জাপানের বহ লেখনীতে এই একশত বছরকে জাপানি ভাষায় ” সেনগোকু জিদাই ” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে – জাপানি ভাষায় যার অর্থ : “যুদ্ধরত দেশের বয়স ” | ইতিহাসে তিনজন মিলিটারি জেনারেলের উল্লেখ পাওয়া যায় ,যথা : নবুঙ্গা ওডা ,হিদেওসি তোয়োটোমি এবং ইয়াসু তোকুগাওয়া | বহু বছরের প্রচেষ্টায় এনারা জাপানকে সংগঠিত ও সুস্থ পরিচালন ব্যবস্থার মধ্যে একত্রিত করতে সক্ষমতা লাভ করেছিলেন | জাপানে এই তিন জন মিলিটারি জেনারেলকে সন্মান জানানোর সাথে সাথে এনাদের সাফল্যকে উদযাপনও করা হয়ে থাকে | মিলিটারি জেনারেল “হিদেওসি তোয়োটোমি ” ওসাকা শহরকে জাপানের অর্থনৈতিক রাজধানীও হিসাবে গড়ে তোলেন ও জাতীয় এবং বৈদেশিক ব্যবসায়িক প্রসারের চেষ্টা করে ছিলেন|
১৭০০ শতকের থেকেই জাপানে Candlestick এর ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায় | যেহেতু মিলিটারি শাসন ব্যবস্থার মধ্যে জাপান এই সময়ে উন্নতি করছিলো তাই Candlestick এর অনেক Pattern এর মধ্যেই অনেক সামরিক নামের উল্লেখ পাওয়া যায় , যথা ( থ্রি হোয়াইট সোলজার্স , কাউন্টার অ্যাটাক লাইন্স, মারুবজু ) ইত্যাদি | সময়ের সাথে সাথে উন্নতি ও চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে “ওসাকা ” বৃহৎ বাজারে পরিণত হয় | সেই সময় “ওসাকা” কে জাপানের খাদ্য ভান্ডার বলে আখ্যা দেওয়া হতো কারণ কোনো অর্থনৈতিক টাকা – পয়সার কোনো প্রচলন ছাড়াই শুধু মাত্র চালের বিনিময়ের ভিত্তিতে এই বিরাট বাজার পরিচালিত হতো |
Candlestick এর জনক হিসাবে সম্মানিত “মুনাহিসা হোমা” ১৭২৪ সালে এক বর্ধিষ্ণু কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন | হোমা পরিবার এতটাই বর্ধিষ্ণু এবং প্রতিপত্তি সম্পন্ন ছিল যে তাদেরকে স্থানীয় রাজা হিসাবে সন্মান জানানো হতো | ২৬ বছর বয়েসে ১৭৫০ সালে যখন “মুনাহিসা হোমা” পারিবারিক ব্যবসায়ের হাল ধরেন তখন তিনি স্থানীয় বন্দর শহর ” সাকাটা ” চালের এক্সচেঞ্জে ট্রেডিং শুরু করেন | পিতার মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ হলেও তার ব্যবসার প্রতি আকর্ষণ ও অধ্যাবসায় দেখে পরিবারের একত্রিত মতামতের ভিত্তিতে “মুনাহিসা হোমা” কে পারিবারিক সম্পত্তি দেখভালের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয় | পরবর্তী সময়ে হোমা ব্যবসার স্থান পরিবর্তন করে ওসাকা শহরে জাপানের তৎকালীন সর্ববৃহৎ রাইস এক্সচেঞ্জ “ডোজিমা রাইস এক্সচেঞ্জ” এ ব্যবসা পরিচালনা এবং চালের ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট ট্রেডিং শুরু করেন |
ব্যবসায়ের প্রতি অধ্যাবসায় ও প্রখর চিন্তাশীল হওয়ার কারণে “মুনাহিসা হোমা” বাজারের সকল তথ্যের ভান্ডার তৈরী করেন, যথা ( ষান্মাসিক আবহাওয়ার খবর , বিনিয়োগকারীদের চাহিদা , মানসিকতা , দামের পরিবর্তন , পরিবর্তনের সময়সীমা , দামের পরিবর্তনের রেঞ্জ ইত্যাদি ) ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে হোমা চালের দামের বিশ্লেষণ শুরু করেন | ওসাকা রাইস এক্সচেঞ্জে অধিপত্ব বিস্তার করার পর এডো ( বর্তমানের টোকিও) আঞ্চলিক রাইস এক্সচেঞ্জে ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ করেন এবং কথিত আছে তার নিজস্ব নির্মিত ট্রেডিং কৌশল অনুসর করে ধারাবাহিক ১০০ টি সফল ট্রেড সম্পাদন করে নিজের প্রতিপ্রত্তির সম্ভার বিস্তার করেন |
“মুনাহিসা হোমা” তার ট্রেডিং ব্যবসা এতটাই (সাকাটা – ওসাকা -এডো ) বিস্তারিত করেছিলেন যে তার ব্যবসায়ের ওপর নির্ভর করে তৎকালীন সময়ে একটি গানের প্রচলন হয়ে গিয়েছিলো | এই গানে “মুনাহিসা হোমা” মহাশয়ের চালের ট্রেডিংয়ে প্রভাবের স্পষ্ট উল্লেখ লক্ষ্য করা যায় | পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় আর্থিক পরামর্শদাতা হিসাবে হোমা কাজ করেন এবং “সামুরাই” সাম্মানিক উপাধি লাভ করেন | ১৮০৩ সালে হোমা মহাশয় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন | “হোমা” তার লিখিত বই (Sakata Senho and Soba Sani No Den) তে তার নির্মিত Candlestick এর সকল তথ্য , ট্রেডিং কৌশল , প্রয়োগ বিদ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছিলেন |
যদিও অজানা কারণবশত জাপানি এই বিশেষ টেকনিকাল বিশ্লেষণ পদ্ধতিকে জাপানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ও কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছিলো ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে , কিন্তু ১৯৮৭ সালে মার্কিনি টেকনিকাল অ্যানালিস্ট “স্টিভ নিসন” জাপানে কাজের সূত্রে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে পারেন এবং তিন বছরের অধিক সময় ধরে কঠোর অধ্যয়ন করার পর তিনি এই সম্পর্কে দখল লাভ করেন এবং তার রচিত বই :”Japanese Candlestick Charting Techniques” এর মাধ্যমে পাশ্চাত্যের বিশ্বে এই Candlestick পদ্ধতির পরিচিতি পায় | দ্রুত ও নির্ভুল ট্রেডিং সাইকোলজির সম্ভার এই Candlestick এর মধ্যে নিহিত থাকে জন্য এই পদ্ধতি সকল ক্ষেত্রেই দামের নিরিখে সফলতা অর্জন করে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে |
Candlestick এর বিশেষ্যত্ব : –
* সহজে বোধগম্য |
* ভবিষ্যৎ দামের পরিবর্তনের দ্রুত ইঙ্গিত বাহক |
* অভন্তরীন মার্কেট তথ্য অন্তর্নিহিত অবস্থায় থাকে |
* সহজে পঠন পাঠন করা সম্ভব |
* ব্যক্তিগত বিশ্লেষণের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে|
Candlestick এর নির্মাণ পদ্ধতি : –
বর্তমান টেকনিকাল বিশ্লেষণের আধুনিকীকরণ এবং দ্রুত অগ্রগতির পেছনে Candlestick Patterns ও বিশ্লেষণ পদ্ধতির সহযোগিতা অনস্বীকার্য | বার চার্টের ন্যায় এই টেকনিকাল পদ্ধতির মধ্যেও দামের প্রতিটি প্রয়োজনীয় তথ্য নিহিত থাকে কিন্তু এর বিশেষ্যত্ব হলো দ্বিমাত্রিক () – ত্রিমাত্রিক () ভিউ | এই দ্বিমাত্রিক বা কোনো ক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক ভিউ পাওয়া যায় বলে এই চার্ট পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই বুলিশ / বিয়ারিশ সেন্টিমেন্টের পরিচয় পাওয়া সম্ভব |
Candlestick Patterns এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট :-
বার চার্টের মধ্যেও দামের সকল তথ্য অন্তর্নিহিত থাকলেও Candlestick Chart এর মধ্যে ট্রেডিং সেন্টিমেন্টের প্রভাব আছে এবং যা Candlestick এর বডি ও রঙের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়ে থাকে | প্রতিটি ক্যান্ডেলের মধ্য যে সলিড অংশটি থাকে তাকলে বডি বলা হয়ে থাকে এবং ওপর ও নিচের দাড়ি গুলিকে শ্যাডো নামে অবিহিত করা হয়ে থাকে |
কোনো নির্দিষ্ট সময়ের (দিন – সপ্তাহ – মাস) বডি সেই সময়কার ওপেন ও ক্লোসিংয়ের মধ্যের রেঞ্জ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে থাকে | ওপরের দিকের শ্যাডোকে – আপার শ্যাডো এবং কোনো ক্যান্ডেলের নিচের দিকের শ্যাডোকে লোয়ার শ্যাডো হিসাবে নামকরণ করা হয়েছে | এই শ্যাডো যুগল ওই নির্দিষ্ট সময়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ও সর্বনিম্ন মাত্রার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা প্রদান করে থাকে |
পসিটিভ ও নেগেটিভ ক্লোসিংয়ের ভিত্তিতে আমরা ক্যান্ডেলের মধ্যে রঙের পরিবর্তন লক্ষ্য করে থাকি | যখন রিয়েল বডির রং সাদা অথবা সবুজ দেখতে পাওয়া যায় তা এক লহমায় বোঝা সম্ভব যে ওপেন অপেক্ষা ক্লোসিং ওপরে হয়েছে অর্থাৎ সেটি একটি পসিটিভ ক্লোসিং এর ইঙ্গিত বহন করে চলেছে | যখন ওপেন অপেক্ষা ক্লোসিং নিচে অর্থাৎ দুর্বল ক্লোসিং লক্ষ্য করা যায় তখন ক্যান্ডেলের রিয়েল বডির রং লাল অথবা কালো হয়ে থাকে |
কখনো কখনো শ্যাডো বিহীন ক্যান্ডেলকেও আমরা দেখতে পারি , ওপরের দিকে শ্যাডো বিহীন ক্যান্ডেলেকে (শেভড হেড ক্যান্ডেল / মুন্ডিত মাথার ক্যান্ডেল) এবং লোয়ার শ্যাডো বিহীন কোনো ক্যান্ডেলকে আমরা ( শেভড বটম ক্যান্ডেল) বলা হয়ে থাকে |
Japanese Candlestick এর সারমর্মের নিরিখে প্রতিটি ক্যান্ডেলের বডি সেই নির্দিষ্ট সময়ের মোমেন্টামের শক্তির পরিষ্কার চিত্র উপস্থাপন করে থাকে | কোনো ক্যান্ডেলের আয়তন, রং উক্ত সময়ের বাজারের সেন্টিমেন্ট ও
Japanese Candlestick এর সারমর্মের নিরিখে প্রতিটি ক্যান্ডেলের বডি সেই নির্দিষ্ট সময়ের মোমেন্টামের শক্তির পরিষ্কার চিত্র উপস্থাপন করে থাকে | কোনো ক্যান্ডেলের আয়তন , রং উক্ত সময়ের বাজারের সেন্টিমেন্ট ও বর্তমান আবহাওয়ার চিত্র তুলে ধরে পাঠক ও বিশ্লেষকদের সামনে | এর থেকে বাজারের এবং নির্দিষ্ট স্টকের পরিচালন শক্তি কার হাতে বুল না বিয়ার তার সম্পর্কে সচিত্র বিবরণ পাওয়া সম্ভব |
পসিটিভ Candle:
যেহেতু Candlestick কোনো স্টকের ও মার্কেটের অ্যানালিসিস কে দ্রুত ও নিপুন করে তুলতে সাহায্য করে তাই এই পদ্ধতি মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে | প্রতিটি ক্যান্ডেলের মধ্যে সকল তথ্য ভরপুর মাত্রায় অবস্থান করে | শেয়ারটি বুল নাকি বিয়ার সেন্টিমেন্ট দ্বারা প্রভাবিত , তাদের একাধিপত্য , ক্ষমতা প্রভৃতি এই Candlestick এর মাধ্যমে ফুটে ওঠে |
একটি পসিটিভ ক্যান্ডেল সাধারণত সাদা / সবুজ রঙের হয়ে থাকে | সম্পূর্ণ ভাবে বুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে প্রবল বুলিশ সেন্টিমেন্টের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে দিনের শুরু থেকেই দামের উত্থান শুরু হয় ও শেষ পর্যন্ত তা অন্তর্নিহিত বুলিশ প্রেসার বজায় রেখেই ওই নির্দিষ্ট সময়ের সর্বোচ্চতার পার্শবর্তী স্থানে ক্লোসিং প্রদান করে থাকে | ক্যান্ডলের রিয়েল বডি দিনের সামগ্রিক ছবিটিকে তুলে ধরে প্রধান প্রবণতা ও সেন্টিমেন্টের ইঙ্গিত প্রদান করে থাকে , অর্থাৎ এইখানে বড় পসিটিভ বডি প্রবল বুলিশ প্রভাবের সংকেত প্রদান করছে |
অনুরূপ ভাবে কোন সপ্তাহের candle সেই নির্দিষ্ট সপ্তাহের ট্রেডিং সাইকোলজি , সেন্টিমেন্ট প্রবণতার চিত্রটি পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরতে সাহায্য করে থাকে | একই ভাবে মান্থলি ক্যান্ডেল সেই নির্দিষ্ট মাসের সেন্টিমেন্টের চিত্রকে তুলে ধরে থাকে | ক্যান্ডলের বডির ওপর ও নিচের শ্যাডো গুলি ওই নির্দিষ্ট সময়ের সির্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাত্রার ধারণা দিয়ে ওপেন ও ক্লোসিংয়ের নিরিখে বুলিশ – বিয়ারিশ প্রেসার , প্রভাব , সেন্টিমেন্টের স্থায়িত্ব বোঝাতে সাহায্য করে থাকে |
ক্যান্ডেলস্টিক বিশ্লেষণ সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে বেসিক টেকনিকাল অ্যানালাইসিস কোর্সটি এ রেজিস্টার করুন |
নেগেটিভ ক্যান্ডেল :-
প্রতিটি ক্যান্ডেলের মধ্যে সেই নির্দিষ্ট সময়ের তথ্য অন্তর্নিহিত থাকে | শেয়ারটি বিয়ার সেন্টিমেন্ট দ্বারা প্রভাবিত , বিয়ারদের একাধিপত্য , ক্ষমতা প্রভৃতি এই Candlestick এর মাধ্যমে ফুটে ওঠে |
একটি নেগেটিভ ক্যান্ডেল সাধারণত কালো / লাল রঙের হয়ে থাকে | সম্পূর্ণ ভাবে নেতিবাচক / নেগেটিভ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে প্রবল বিয়ারিশ সেন্টিমেন্টের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে দিনের শুরু থেকেই দামের সংশোধন শুরু হয় ও শেষ পর্যন্ত তা অন্তর্নিহিত বিয়ারিশ প্রেসার বজায় রেখেই ওই নির্দিষ্ট সময়ের সর্বনিন্ম দামে, কোনো ক্ষেত্রে সর্বনিম্ম দামের পার্শবর্তী কোনো দামে ক্লোসিং প্রদান করে থাকে | ক্যান্ডলের রিয়েল বডি দিনের সামগ্রিক ছবিটিকে তুলে ধরে প্রধান প্রবণতা ও সেন্টিমেন্টের ইঙ্গিত প্রদান করে থাকে , অর্থাৎ এইখানে বড় নেগেটিভ বডি প্রবল বিয়ারিশ প্রভাবের সংকেত প্রদান করছে |
Candlestick Patterns সম্পর্কে আরো জানতে আপনি নীচের ভিডিওটি দেখতে পারেন:
রিভার্সাল প্যাটার্ন্স :-
পসিটিভ ছোট/ক্ষুদ্র রিয়েল বডি, ক্ষেত্র ও সময় , স্থানবিশেষে মনোভাবের পরিবর্তন স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায় | মোমেন্টাম হ্রাস ও কিছুক্ষেত্রে রিভার্সালের ইঙ্গিতও প্রতিফিলিত থাকে যথা ( দোজি, স্পিনিং টপ , হারামি , ইভনিং স্টার , মর্নিং ষ্টার ) ইত্যাদি |
এই সংক্রান্ত রিভার্সাল এবং অ্যাডভান্স প্যাটার্ন নিয়ে আগামী কোনো ব্লগে আমরা বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো |
এছাড়াও পড়ুন: ক্যান্ডেলস্টিক রিভার্সাল প্যাটার্নের সাথে পরিচয় (Introduction to Candlestick Reversal Patterns)
এছাড়ার Candlestick এর একটি E – BOOK পড়তে পারেন,যেখানে সহজে ও সংক্ষিপ্ত ভাষায় ৩৭ টি Candlestick এর চরিত্র ও তার ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করা রয়েছে|
উপসংহার
আশাকরি আমাদের এই ব্লগটি আপনাদের কার্যোপযোগী হয়ে উঠবে এবং ধারাবাহিক এই বাংলা Candlestick এর আগামী ব্লগগুলি আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ও আপনাদের ট্রেডিংকে ক্ষুরধারপূর্ণ এবং নিপুন করে তুলতে সাহায্য করে থাকবে |
বি:দ্র: আপনাদের যে কোনো প্রকার প্রশ্ন নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে পাঠান, আপনাদের সাহায্যার্থে সদা-সর্বদা প্রচেষ্ট থাকার জন্য অঙ্গীকার বদ্ধ আমরা |
Hola! I’ve been following your website for some time now and finally got the courage to go ahead and give you a shout out from Huffman Texas! Just wanted to tell you keep up the good job!
Would you please tell me how to get the candlestick E-book?
Hi,
We really appreciated that you liked our blog! Thank you for your feedback!
Keep Reading!