English: Click here to read this article in English.
সারমর্ম:
- বর্তমানে সমগ্র পৃথিবী একটি বিশেষ আলাদা ধরণের পরিস্থিতিটির মধ্যে দিয়ে চলেছে | সকল প্রাথমিক ধ্যান ধারণার বেড়াজাল ভেঙে অপ্রত্যাশিত ভাবে এই COVID 19 ভাইরাস তার মারণ জাল বিস্তার করে চলেছে | এর কুপ্রভাব কবে থেকে হ্রাস পাওয়া যাবে সেটির দিকে সকলেই তাকিয়ে রয়েছে |
- মহামারী ক্রমাগত চলার কারণে যেসকল বহুজাতিক সংস্থা গুলি চীন নির্ভর ব্যবসা সম্প্রসারণ ঘিটিয়েছিলো তারা ভারতবর্ষে ঘাঁটি স্থানান্তরের পরিকল্পনায় ব্যস্ত , কারণ চীনের পর ভারতবর্ষ দ্বিতীয় বৃহত্তম জন সংখ্যার দেশ যেখানে বহুজাতিক কোম্পানিদের প্রয়োজনীয় সকল কাজ সহযে সুলভে সম্পাদন করার উপযুক্ত ম্যান পাওয়ার রয়েছে |
- আমাদের অত্যন্ত দক্ষতার সাহে সূক্ষাতিসূক্ষ বিচার করে কোম্পানি ও করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিশ্লেষণ করতে হবে | মহামারী সংক্রমণের পরবর্তীতে ধীরে ধীরে উন্নতি সাধনের লক্ষে চলমান সংস্তাহ ও তাদের পূর্ববর্তী ও আগামী দিনের প্রভাবের বিষয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে |
- এমন কোনো সংস্থাও থাকতে পারে যা তাদের নিজস্ব সুচারু মডেলের কারণে – নেগেটিভ সেক্টরের অধীনস্থ থেকেও পসিটিভ অথবা প্রভাবহীন থাকতে পারে |
কোভিড -১৯ (নভেল করোনাভাইরাস) এর বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব -২০০৩ এর SARS ভাইরাসের ফলাফলের চেয়ে অনেক বোরো মাত্রায় ঘটবে | বস্তুত SARS -২০০৩ কিছু জায়গায় সীমাবদ্ধ ছিল যার প্রভাব সম্পূর্ণ বিশ্বে সামগ্রিক ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয় নি |
চলমান সঙ্কটজনক মহামারী পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে যত বেশি সময় লাগবে বিশ্ব অর্থনীতির উপর প্রভাব আরও বাড়তে থাকবে ।
একটি সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে – করোনভাইরাস (কোভিড -১৯) প্রাদুর্ভাবের ফলে, ৫০ শতাংশেরও বেশি ভারতীয় সংস্থার কাজকর্মের উপর প্রভাব দেখা যাচ্ছে এবং প্রায় নগদ ৮০ শতাংশ প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে |
এই মহামারীটি ভারোতীয় কোম্পনিগুলির নগদ প্রবাহকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে, প্রায় 80 শতাংশ নগদ প্রবাহ হ্রাসের খবর অনেক জায়গাতেই উঠে এসেছে ।
প্রায় ৪২ শতাংশ উত্তরদাতারা মনে করেন সব কিছু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে | কিন্তু ধীরে ধীরে লকডাউনের বৃদ্ধি সামগ্রীওক চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে ইতোমধ্যে মন্দা শুরুর প্রভাব অনেক জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে |
FICCI র রিসার্চ অনুসারে চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় কোয়াটারে অর্থনতিক গ্রোথ ৬ বছরের সর্বনিম্ন ৪.৭ হবে |
গোল্ডম্যান শ্যাচেস ২০২১ অর্থবর্ষে ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক গ্রোথের অনুমান ৩.৩ থেকে কমিয়ে ১.৬ করেছে |
Fitch Ratings এবং ICRA র রিসার্চে ২০২১ অর্থবর্ষে বারোটার অর্থবৃস্সির হার ২% থাকবে বলে অনুমানা করা হচ্ছে অপর দিকে S&P এবং Moody’s ’অনুমান করছে গ্রোথ যথাক্রমে ৩.৫% এবং ২.৫ % হবে |
আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় সর্বসম্মত ভাবে রেটিং এজেন্সিগুলি Covid-19 মহামারীর কারণে ভারতবর্ষের অর্থনীতিতে সুনামি আসার আশঙ্কার প্রকাশ করেছেন |
যেহেতু ইউরোজোন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা এশিয়া-প্যাসিফিকের সাথে চীনের ব্যবসায়িক লেনদের অনেক বেশি এবং জোরদার বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে তাই তাদের মতো বিকট মন্দার প্রভাব না হলেও , বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে ভারতের GDP বৃদ্ধির উপর নেগেটিভ প্রভাব উল্লেখযোগ্য হবে |
সুতরাং দেখা যাক কারা নেতিবাচক এবং ইতিবাচক ভাবে প্রভাবিত হয়েছে তা খুঁজে বের করা যাক :

যে সকল সেক্টরগুলির ওপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা প্রবল :
১. অটো এবং অটোমোবাইলের আনুষঙ্গিক :
- গত ৫ বছরে ২/৩ চাকার গাড়ির যন্ত্রাংশ চীন থেকে আমদানির পরিমান ৪৬% বৃদ্ধি পেয়েছে ( ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)| কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে আমদানি রপ্তানি বন্ধ হওয়ার ফলে সাম্প্রতিকভাবে ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টকে ব্যাহত করবে।বর্তমান ইনভেন্টরি চক্রটি ৩০ দিনের |
- অটোমোবাইল আনুষাঙ্গিক সামগ্রীর ব্যবসা থেকে শুরু করে টায়ার ব্যবসাতে গত বছরের তুলনায় এই বছরে পতন লক্ষ্য করা গেছে | OEM – অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাচড়ার – শিল্পে গত বছর ১৬% গ্রোথ দেখা গেলেও বছরের শুরুতেই ১৪% ঘাটতি লক্ষণীয় | অন্যদিকে এনসিলারি/ আনুসাঙ্গিক শিল্পে ১৪.৭% বৃদ্ধি দেখা গেলেও তা ১১.৭% ঘাটতি হয়েছে |
- ২০২০ – ২০২১ অর্থবর্ষে বিদ্যমান মন্দার কারণে এই শিল্পে আগামী দিনে বড় অঙ্কের খরার সম্ভাবনা রয়েছে | আরো মনে করা হচ্ছে যে আগামী দিনে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে মহামারীর প্রভাব কমে গেলেও গাড়ি শিল্পে গ্রাহকদের সেন্টিমেন্ট ও চাহিদা অনুকূলে থাকবে না , যার কারণে H1 FY21 অনিশ্চিত অর্থনৈতিক মধ্যে দিয়েই কাটবে বলে মনে করা হচ্ছে |
২. বিমান চলাচল:
- নভেল কোরোনাভাইরাস (কোভিড -১৯) এর উৎসের কেন্দ্রস্থল বিভিন্ন ভৌগলিক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার কারণে সকল যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ করার সিধান্ত নিয়েছে দেশ ও বিদেশের অনেক সরকার | তাই আজ বিমান সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানিগুলি লকডাউনের আওতাধীন হওয়ার কারণে সকল বিধিনিষেধের সামনে করতে হচ্ছে ফলে এই শিল্প ভয়ানক আর্থিক ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে |
- লকডাউনের আওতায় থাকা বেশিরভাগ দেশ বিদেশী নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে, বিশ্বজুড়ে বিমান সংস্থাগুলি চাহিদার অভাবে তাদের কার্যক্রম আপাতত ভাবে বন্ধ করেদিয়েছে |
- এমনকি ভারতীয় বিমান শিল্পের ম্যাক্রোগুলিও এর প্রবৃদ্ধিকে চালিত করার পক্ষে থাকতে পারে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপ, ভ্রমণ এবং পর্যটন এবং অর্থনীতিতে যে মহামারীটি প্রভাবিত হয়েছে তা এই ইন্ডাস্ট্রি খুব শীঘ্রই পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে পারবে না বলে মনে হচ্ছে |
৩. হোটেল ও পর্যটন:
- ভারত সরকার এবং বিশ্বজুড়ে সরকার কর্তৃক আরোপিত বিভিন্ন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সম্মেলনের জন্য ফরওয়ার্ড বুকিং এবং বিদেশী গন্তব্যে অবসর ভ্রমণ বুকিং ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে।
- ট্রাডিশনাল ও পুরানো হোটেল ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত নতুন সম্প্রসারণ করা অথবা নতুন চেন হোটেল কোম্পানিরা কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন যা তাদের বুক অফ একাউন্টে প্রভাব ফেলবে | প্রফিট কম হওয়ার সাথে উচ্চ সুদের বড় অঙ্কের ঋণ পরিশোধ করার কারণে লিকুইডিটি কম ও ক্রিডিট পলিসিতে কঠিনতার সামনে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে |
- হোটেলের অপারেশনাল প্যারামিটারগুলি (অকুপেন্সি রাতে (ORs)- অ্যাভারেজ রুম রেটস – ARRs) পরের কয়েকটি কোয়াটারে বিরূপ প্রভাব থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে |
৪. ক্যাপিটাল গুডস :
- মোট আমদানির মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যগুলির (31%) অবদান রয়েছে দুগ্ধ যন্ত্রপাতি (5.5%), বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি (3.8%), রেফ্রিজারেশন যন্ত্রপাতি (2.4%), ধাতব (8%) প্রধান অবদানকারী |
- মোট আমদানির ৩২ % বৈদ্যুতিন পণ্যের অবদান রাখে যার সাথে মোবাইল এবং টেলিফোন সরঞ্জাম ১০.৫ %, ইলেকট্রনিক উপাদানগুলি৮.৩% এবং কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ৫.৭ % অবদান রাখে। স্মার্টফোনে ব্যবহৃত মোট সামগ্রীর ৮৫ % এবং টেলিভিশনে ৭৫ % চীন থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে । নতুন মডেল বাজারজাত হওয়ার স্কোয় বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সাহে দামের বৃদ্ধিও ঘটতে পারে |
- রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনার, কম্প্রেসার, টেলিভিশন প্যানেল, এলইডি চিপস এবং ইলেক্ট্রিক মোটর ইত্যাদির প্রয়োজনী বেশিরভাগ পণ্য চীন থেকে আমদানি করা হতো | সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ফলে পণ্যগুলির সরবরাহের দাম বাড়াতে পারে | চাহিদা অপেক্কাহ যোগান কম থাকতে পারে |
- খাতটির রফতানি পরিমিত হয়েছে এবং মোট বৈশ্বিক খাতের প্রায় 0.৬ % অবদানকারী মোট মূলধন পণ্য খাতের ২৫ তম রফতানিকারক দেশ ভারত।
৫. নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (NBFC) / হাউজিং ফিনান্স সংস্থাগুলি (HFC):
- চললমান দুরবস্থায় NBFC কোম্পনীদের – MSME – মাইক্রো লোন অসুবিধার সম্মুখীন হতে পরে | এর প্রভাব গ্রামীণ পোর্টফোলিওগুলিতে ছড়িয়ে পড়ার আগে নগর ও আধা-শহুরে পোর্টফোলিওগুলিতে দেখা যাবে |
- এর প্রভাব MFI-তে আরও বেশি হতে পারে শহুরে অঞ্চলে ফোকাস করা কারণ গ্রাহক প্রোফাইলের মধ্যে ছোট ব্যবসা বা চুক্তি ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিকদের জড়িত থাকবে প্রচলিত লকডাউনের কারণে ম্যান-ডে কাজের হারানো। যদি লকডাউনের সময়কাল সীমিত থাকে, গ্রামীণ MFI গ্রাহকদের উপর প্রভাব সীমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তদ্বিপরীত।
- NBFC / HFC ( হাউসিং ফিনান্স কোম্পানি ) গুলি যে চ্যালেঞ্জমূলক অর্থায়নের পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রশমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে, এখন কোভিড -১৯ এর বাধাকে সম্মুখীন করতে হবে।এই খাতটি মোটামুটি পুঁজিবদ্ধ থাকার পরেও, ক্ষুদ্র , খুচরা সম্পদ শ্রেণীর ঋণ প্রবণতা পরবর্তী কয়েক ফিন্যাসে কোয়াটারে NBFC / HFC কোম্পনীদের উৎস ও বৃস্সির ক্ষমতার ওপর ধাক্কা দিতে পারে |
৬. রাসায়নিক (কেমিক্যাল ) :
- গার্হস্থ্য বিশেষত্ব এবং কৃষি রাসায়নিক পদার্থের একটি শক্তিশালী সরবরাহ চেইন এবং আন্তর্জাতিক রফতানি পদক্ষেপের সাথে আন্তর্জাতিক দাম বৃদ্ধির সুবিধা অর্জন করতে পারে।
- মৌলিক কাঁচামাল এবং মধ্যস্থতাকারীদের সরবরাহ বাধাগুলি দাম বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে।
- কয়েকটি ফসল সুরক্ষা প্রদানকারী সংস্থা চীন থেকে তাদের সক্রিয় উপাদানগুলির প্রয়োজনীয়তার বিশেষে সংগ্রহ করে থাকে । অতএব,বর্তমান সময়ের সরবরাহের ব্যাঘাত ঘটে এই সংস্থাগুলির জন্য ব্যয় বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক মার্জিনের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে |
৭. মেটাল এবং মাইনিং :
অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী ছাহীহর সংকোচন হবে বলে মনে করা হচ্ছে , যা ধাতব কোম্পানিগুলির বাণিজ্য এবং দামের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে | বর্তমানে, চীন থেকে ভারতে আমদানি প্রায় ৫,৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রফতানি ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে, যা ভারতীয় কোম্পানিদের জন্য দেশীয় চাহিদা মেটাতে একটি বিশাল সুযোগের পরিচায়ক।
৮. সোলার পাওয়ার :
- ভারতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল উপাদান প্রধানত চীন থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে | সৌর প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৬০% খরচই ওই প্যানেলে হয়ে থাকে |
- প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করে চীনা সংস্থাগুলি ভারতে ব্যবহৃত সৌর কোষ এবং মডিউলগুলির প্রায় ৮০ শতাংশ সরবরাহ করে সৌর উপাদানগুলির বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছে ।
- চাইনিস সৌর বিদ্যুৎ উপাদান সরবরাহকারী কোম্পনিগুলি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে – কম উৎপাদন – পরিবহন – গুণগতমান বিষয়ে ইতিমধ্যেই ভারতীয় সংস্থাগুলির সাথে কথা বলেছে বলে সোনা যাচ্ছে |
৯ . তেল ও গ্যাস:
- আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত ক্রুড অয়েলের দামের পতন OMC ( অয়েল মার্কেটিং কোম্পানি ) দের ইনভেন্টরিতে প্রভাব ফেলতে পারে এবং শর্ট টার্মে – গ্রস রিফাইনিং মার্জিন ও লভ্যাংশ কিছুটা হ্রাস হতে পারে |
- তবে সংস্থাগুলির বৈশ্বিক সরবরাহের ঘাটতি এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে চাহিদা কমে যাওয়ার দ্বিগুণ শক থাকবে।
- সরবরাহ এবং চাহিদা উদ্বেগের দ্বিগুণ ঘাত্ত্বিক প্রভাব দ্বারা আগামী কোয়াটারগুলিতে সংস্থাগুলির কর্মক্ষমতা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে।
যেসকল ক্ষেত্রগুলি ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে :
১. FMCG :
- বর্তমান সময়ে ক্রুড অয়েলের দামের পতন এই শিল্পের ক্ষেত্রে সুবিধা অপ্রধান করবে কারণ অনেকংশেই এই শিল্পের ডেরিভেটিভ বিভিন্ন ভাবে ক্রুড অয়েলের সাথে সংযুক্তপূর্ণ |
- অপরিশোধিত তেল ও ডেরাইভেটিভ প্রোডাক্টের দাম কমে যাওয়ার কারণে FMCG সেক্টরের ওপরে একটি প্রান্তিক সুবিধা রয়েছে।
- যেহেতু লকডাউনের কারণে সকলেই গৃহবন্দী তাই পণ্যগুলির ব্যবহার বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল এবং এ কারণে এই সংস্থাগুলির উপার্জনের উন্নতি হবে।
২ . শিক্ষা:(এডুকেশন ):
- যেহেতু অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থী পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছেন তাই
শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফি আকারে উপার্জন অব্যাহত থাকায় শিক্ষাব্যবস্থা প্রভাবিত হবে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাপ্য ফী সংগ্রহে কোনও প্রভাব পড়বে না।অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে সব কিছু সুন্দর ভাবে সচল থাকবে |
- বিভিন্ন ই-পোর্টাল শিক্ষার অবিচ্ছিন্ন ও মসৃণ ভাবে পরিবেশনের উপযোগী পরিষেবা সরবরাহ করবে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উভয়েরই উপকার হবে |
- অনলাইনে ব্যবস্থায় অভ্যস্থ হয়ে শিক্ষার্থ ও অবিভাবকদের হয়তো কিছুটা দেরি হতে পারে ফী পি[রোদনের ক্ষেত্রে কিন্তু এটি একটি অস্থায়ী সমস্যা | ই- লার্নিং শুরু হয়ে যাওয়ার ফলে ইনস্টিটিউটগুলির মডেলকে প্রভাবিত করবে না এবং তাই এই খাতটি ইতিবাচকভাবে ফল করবে বলে মনে করা হচ্ছে |
৩. মিডিয়া এবং বিনোদন:
- ২০১৯- অর্থবছরের হিসাবে এই খাতের মূল্য প্রায় ১৮৮৭ বিলিয়ন ডলার। ডিজিটাল মিডিয়া, অনলাইন গেমিং, রেডিও এবং ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মের মতো বিভাগগুলি উপকৃত হবে কারণ ব্যক্তিরা ঘরে বসে থাকতে বাধ্য হবেন এবং তাদের বিনোদনের একমাত্র উৎস হিসাবে এই জাতীয় মাধ্যমগুলি ব্যবহার করতে বাধ্য হবেন ।
- ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিকস, হকি প্রো লিগ, এশিয়া কাপ, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ক্রিকেট আইপিএল সহ একাধিক ইভেন্ট কনসার্ট এবং স্পোর্টস ইভেন্টগুলি নির্ধারিত ছিল, বর্তমানে কয়েকটি স্থগিত রয়েছে, এবং কয়েকটি পিছিয়ে গেছে ও কয়েকটি বাতিল করা হচ্ছে।
- এই সক্টরের কিছু অংশে OTT ( ওভার দা টপ – হাই স্পিড ইন্টারনেট সহযোগে সরবরাহ করা বিষয়বস্তু) কন্টেন্টের চাহিদা রয়েছে | বিদ্যমান সামগ্রীগুলিকে স্বল্প খরচে পুনর্নির্মাণ ও পুন:প্রচারের মাধ্যমে সিনেমা হল বন্ধের নেতিবাচক প্রভাব কিছুটা কমবে | এক অংশের লস অন্য অংশ থেকে ম্যানেজ করে ক্ষতির হ্রাস করতে হবে |
৪ . টেক্সটাইলস :
- বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইল ও পোশাক ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে চীনের ৪০% অংশ হ্রাস পেতে পারে যা ভারতের রফতানিকারীদের পক্ষে দেশে স্কেলিবিলিটি এবং শক্তিশালী সুতির ভিত্তিকে বিবেচনা করে ইতিবাচক ফল প্রদান করতে পারে । চীন থেকে সোর্সিংয়ের এক্সপোজারটি নগণ্য।
- চীন থেকে আউটসোর্সিং করা ঘরোয়া সংস্থাগুলি অদূর মেয়াদে সরবরাহের অভাব হতে পারে। নতুন গন্তব্যগুলি থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ এবং সরবরাহ করা ব্যবসায়িক মার্জিনের ওপর উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলতে পারে ।
৫ .হেলথকেয়ার :
- মহামারীর পরবর্তী সময়ে এই সেক্টরটি বিশেষ জায়গায় থাকবে – কারণ সোমোলের মধ্যেই স্বাস্থ সচেতনতার বিষয়ক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে | যে কারণে ব্যবসা বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে |
- মহামারীটি এই খাতটিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে সক্ষম হবে না কারণ একসময়ে মহামারী কেটে যাবে । আমাদের দেশে স্বাস্থ্যসেবা, সচেতনতার যে অভাব ছিল তা সামনের আসন গ্রহণ করবে এবং ব্যক্তিদের – গ্রাহকদের প্রয়োজন মেটাতে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলি উন্নত করতে হবে ।
- মহামারী ভারতবর্ষের মানুষকে অনেকক্ষেত্রেই – চিকিৎসা বীমার তাৎপর্য বোজাতে সাহায্য করেছে | আশা করা যায় মানুষ আগামী দিনে অপ্রয়োনীয় খরচ কমিয়ে সঞ্চয়ের দিকে নজর দিয়ে – চিকিৎসা খাতের ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনা করবেন | এই কারণে জীবন বীমা – চিকিৎসা বীমা / মেডিক্লেইম কোম্পানিগুলির ব্যবসা বৃদ্ধির প্রবণতার আশা করা যাচ্ছে |
৬ . টেলিকম :
- গত কয়েক বছরে টেলিকম স্পেস একীভূত হয়েছে ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বড় খেলোয়াড় JIO প্রবেশের পরে। এই সেক্টরে অনেক সংস্থার বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে অনেক ছোট কোম্পানি আবার বড় কোম্পনির সাথে বড় সংস্থাগুলিতে মিশে গেছে।
- এই সংকটকালীন পরিস্থিতি টেলিকম কোম্পানিদের কাছে “ঈশ্বরের বর ” পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে | যেহেতু বর্তমান মহামারীর দিকে তাকিয়ে সকলেই গৃহবন্দী তাই অনেক অফিস WORK FROM HOME পদ্ধতি অনুসরণ করছে – স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলি অনলাইন ক্লাস করেছে এবং ঘরের মধ্যেই মানুষ মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার করে বিনোদন খুঁজে পাচ্ছে – তাই টেলিকম সেক্টরে বৃদ্ধির সম্ভাবনা বর্তমান – এই চলমান মহামারী রি সেক্টরে বিশেষ খারাপ প্রভাব সঞ্চার করতে পারেনি |
- অফিসের কাজ থেকে বিনোদন সব ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট ও মোবাইল ডাটা বুযবহার বৃদ্ধি পাবে যা এই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে কলেবর হয়ে দেখা দেবে |
৭ . ফার্মা :
- ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলি বাল্ক ওষুধ (এপিআই) এবং মধ্যস্থতাকারীগণ সকলেই কাঁচামালের মোট ৬৮% বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকে | বর্তমান সময় ভারতীয় কোম্পানিদের ক্ষেত্রে বেশ ভালো কারণ তা ভারতীয় সংস্থাগুলিদেড় অভ্যন্তরীণ ওষুধ এবং (API ) এর উত্পাদন বাড়িয়ে তোলতে পারবে |
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতামূলক তীব্রতার কারণে রফতানি করার সুযোগটি স্থিতিশীল হয়েছে |সরবরাহ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা দাম নিয়ন্ত্রণের তুলনায় গুরুত্তপূর্ণ হবে |
- এই জাতীয় সংস্থাগুলি দ্রুত নিয়ন্ত্রক অনুমোদনের মাধ্যমে ভারতে API উত্পাদন বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনেক ওষুধের জন্য ভারতে API তৈরির পর্যাপ্ত ক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে, এ জাতীয় অনেক সুযোগ সুবিধাগুলি কার্যকর করা হচ্ছে।
- এছাড়াও এমন অনেক ঔষধ রয়েছে যা ভারতীয় কোম্পানিররা প্রস্তুত করে থাকে এবং বিশ্বব্যাপী বাজারে এই সকল ঔষদের চাহিদাও প্রবল – সুতরাং মহামারী চলাকালীন এই সব ঔষদের চাহিত বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে | এছাড়াও API এবং অন্যান্য সমসাময়িক জিনিপত্রের চাহিদা বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে |